রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন
মোঃ বাবলু মল্লিক, নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের, ৩১/০৩/২৩ইং কালিয়া উপজেলার সমাজসেবা অফিসে ভূলে বৃদ্ধার বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। স্বামী মারা গেছেন। তাই বিধবা ভাতা তুলছেন স্ত্রী ছাহেরা বেগম (৯০)।কিন্তু তিনি জীবিত থাকলেও হঠাৎ ভাতা বন্ধ হয়ে যায় ১ বছর।সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তার নাম মৃতদের তালিকায়। এ কারণে ওই নারীর বিধবা ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে।
১বছর ভাতার টাকা না পেয়ে তিনি কালিয়া সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তিনি ‘মৃত্যুবরণ’ করেছেন। তাই ভাতা বাতিল করেছে উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিধবা ভাতা তুলতে গিয়ে নিজেকে মৃত জানতে পেরে হতবাক হয়ে পড়েন ওই বিধবা।
তিনি কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছাহেরা বেগম। তার ভাতা ব্যাংক হিসাব নম্বর ১২২।
এ বিষয়ে ছাহেরা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন স্বামী মারা গেছেন। অনেক কষ্ট করে ছেলে মেয়েদের বড় করে বিয়ে দিয়েছে। ২০০৫ সালে পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আমাকে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেন।ওই টাকা দিয়েই দুইবেলা কোনোমতে খাবার জোগাড় হতো। বিধবা ভাতার কার্ডধারী হিসেবে ছয় মাস পর পর ভাতা উত্তোলন করে আসছি। সে অনুযায়ী গত ১বছর ভাতা মোবাইলের বিকাশে না আশায় জানতে পারি আমি মৃতদের তালিকায়, তাই ভাতা বন্ধ হয়ে আছে। এতে বেশ হয়রানির শিকার হচ্ছি।
কালিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসের জানাযায়, পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা সমাজকর্মী মোঃ তরিকুল ইসলাম কোনো প্রকার কাগজপত্র ছাড়া ও ছাহেরা বেগমের ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক মৃত সনদ ছাড়া তার নাম বিধবা ভাতার তালিকা থেকে কেটে অন্য এক বিধবা মহিলার নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।
এ বিষয়ে সমাজকর্মী মোঃ তরিকুলের কাছে জীবিত ছাহেরাকে মৃত দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
মৃত সনদ পাওয়ার পরে নাম কাটা হয়েছে। মৃত সনদ দেখাতে চাইলে বিভিন্ন অযুহাত দেখায় অবশেষে দুই দিন পর ছাহেরা বেগমের মৃত সনদ দেখাতে ব্যার্থ হন। বলেন পহরডাঙ্গা ইউপির চৌকিদার মাসুদ আমাকে ফোন ছাহেরা বেগম মারার বিষয় টা যানায়। সে জন্য নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভুল করে নামের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার বরেন।জীবিত ছাহেরা বেগমের ভাতার তালিকায় পুনরায় নাম অন্তভূক্ত করে দিবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন,
আমি পহরডাঙ্গার ছাহেরা বেগমের কোনো মৃত সনদ সমাজসেবা অফিসে পাঠায়নি। তবে ৪নং ওয়ার্ড হসরসপুর গ্রামে অন্য সায়রা বেগম আছে তিনি মৃত্যু বরন করেছে, অল্প কয়েকদিন তার মৃত্যুর সনদ পাঠিয়েছি।
পাহরডাঙ্গা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সরসপুর গ্রামের মৃত আবু তালেব শেখের স্ত্রী সায়রা খাতুন নামে অন্য ভাতাভোগী গত বছর ২৮ ফেব্রুয়ারী মারা যায়।
এ বিষয়ে কালিয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম অভিযুক্ত সমাজকর্মী তরিকুলের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিষয়টি জেনে ছুটিতে থাকা অবস্থায় ভুক্তভোগীর ভাতা চালু করে দিয়েছি এবং বকেয়া টাকাও ফেরৎ দেওয়া ব্যবস্থা করছি।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনু সাহাকে বিষয়টি জানালে বলেন, সমাজসেবা অফিসারের সাথে কথা বলবেন বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।